দোরগোড়ায় চক্ষু সেবা

আপনার অথবা আপনার পরিবারের কারো চোখে সমস্যা। দেখতে পারেন না ঠিক মতো। এদিকে, আর্থিক অবস্থা ভালো নয় যে চিকিৎসা করাবেন। তার সাথে হাসপাতালও দূরে বলে চোখের অসুবিধাটা নিয়েই পথ চলতে হচ্ছে। কিন্তু মাঝে মাঝে মনে হয় ‘আহ যদি আমার বাড়িটা হাসপাতালের পাশে হতো আর আমার চিকিৎসা করার সামর্থ্য থাকতো, তবে ভালো করে আবার সব দেখতে পেতাম ’।

এ রকম কল্পনা করেই দিন কাটে দৃষ্টি সমস্যায় ভোগা সমাজের সুবিধা বঞ্চিত মানুষদের। তবে এসব অসহায় মানুষদের কল্পনাকে বাস্তব করতে এগিয়ে আসেন সমাজের আলেকিত কিছু মানুষ। যাদের সহযোগিতায় এমএসএস আই কেয়ার ছুটে যায় দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে, একেবারে মানুষের দোরগোড়ায়।

এমএসএস আই কেয়ার কীভাবে দোরগোড়ায় চক্ষু সেবা কার্যক্রম সম্পন্ন করে তার ছোট্ট একটা বিবরণ দেই। প্রথমে এমএসএস এর শাখা অফিসগুলোতে ভ্রাম্যমাণ আই ক্যাম্পের সিডিউল সহ চিঠি পাঠানো হয়। এই চিঠি পেয়ে শাখা অফিসগুলো বিভিন্নভাবে আই ক্যাম্পের প্রচার করেন সুবিধা বঞ্চিত স্থানীয় জনগণের মাঝে। তারপর নির্দিষ্ট দিন সেই এলাকায় ভ্রাম্যমাণ চক্ষু ক্লিনিকের মাধ্যমে আই ক্যাম্প বসে।

সেখানে সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে চক্ষু দেখা হয় এবং ব্যবস্থাপত্র দেওয়া হয়। ক্যাম্পে যাদের চোখে ছানি সনাক্ত করা হয় তাদের অপারেশনের তারিখ জানিয়ে দেওয়া হয়। ঐ তারিখ অনুযায়ী ছানি রোগীকে কাছাকাছি এমএসএস শাখা অফিসে যেতে বলা হয়। এরপর নির্ধারিত সময়ে রোগীকে এমএসএস এর সহযোগী হাসপাতাল (যেখানে রোগীর অপারেশন হয়) কর্তৃপক্ষ তাদের তত্ত্বাবধানে বিনা খরচে হাসপাতালে নিয়ে যায় এবং অপারেশন সম্পন্ন করে।

অপারেশনের পর রোগীকে অবজার্ভেশনে রাখা হয় পুরো একদিন। এই একদিনে অপারেশন পরবর্তী কোন জটিলতা ধরা না পড়লে তাকে পরের দিন যেখান থেকে নিয়ে আসা হয়েছিল সেখানে বিনা খরচে পৌঁছে দেওয়া হয়। এমএসএস আই কেয়ার অপারেশন, বেড ভাড়া এবং প্রয়োজনীয় ওষুধসহ সম্পূর্ণ প্রক্রিয়ার খরচ বহন করে।

উল্লেখ্য, এবার এমএসএস আই কেয়ার দুটি জেলার (ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড়) ১৪টি স্থানে নয়নতরী ভ্রাম্যমাণ আই ক্লিনিকের মাধ্যমে ৮টি আই ক্যাম্প করে। এই আই ক্যাম্পের মূল উদ্দেশ্য দরিদ্র ও সুবিধা বঞ্চিত মানুষদের ছানি সনাক্ত করা এবং তাদের বিনা মূল্যে ছানি অপারেশন করিয়ে দেওয়া। ৮টি ক্যাম্পে মোট চক্ষু সেবা দেওয়া হয় ৬৭২ জনকে।  আর ছানি সনাক্ত করা হয় ২০০ জনের। এই ২০০ জনের মধ্যে অপারেশনের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে ১৭২ জনকে। অন্যদের ডায়াবেটিস ও অন্যান্য শারীরিক অসুবিধা থাকায় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা ১৭২ জনের মধ্যে ৪৫ জনের সফল অপারেশন সম্পন্ন হয়েছে। বাকিদের নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী আগামী ১৫ ডিসেম্বর ২০২০ এর মধ্যে অপারেশন সম্পন্ন হবে।

  • SHARE

Archives