ইসিপির সহায়তায় ছানি অপারেশনের পর আইভান আত্মনির্ভরশীল

স্বামীর করে রেখে যাওয়া পাকা বাড়ি, আপন ঘর। জীবনের পড়ন্তবেলায় যেখানে সন্তানের দেখভালে পরম শান্তিতে সময় কাটানোর কথা, ৬৫ বছর বয়স্কা আইভানের সেখান থেকে হারাতে হয়েছে ঠাঁই। নিজের ঘরের পাশে কুঁড়েঘরে আবাস, বিতাড়িত হয়েছেন ছেলের সংসার থেকে। এই দুঃসহ জীবনে চোখের আলোও নিভে যাওয়া প্রায়, বলতে গেলে কিছুই দেখতে পেতেন না ছানির কারণে। এই মানুষটির পাশে এমএসএস আই কেয়ারের নয়নতরী ভ্রাম্যমাণ আই ক্যাম্প সহায় হয়ে ওঠার চেষ্টা করেছে।

বগুড়ার শেরপুর উপজেলার বাসিন্দা আইভানের স্বামী বছরখানেক আগে মারা যাওয়ার পর দিশেহারা অবস্থা। মা-বাবা আর সন্তানের সম্পর্ক চিরন্তন, পরম মমতায় আগলে বড় করেছেন নিজ সন্তানকে, অথচ সন্তানের সংসারে ঠাঁই হয়নি তার। হাজার কষ্ট কিংবা সীমাবদ্ধতার পরও সন্তানের চাহিদা পূরণ করে গেছেন, অথচ বৃদ্ধ বয়সে দুবেলা খেয়েপরে চলার দায়টাও তারই নিজের। এই কষ্টের মধ্যেও শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে পেয়েছিলেন ভাইয়ের মেয়েকে। তিনিই এমএসএস আই কেয়ারের নয়নতরী ভ্রাম্যমাণ আই ক্যাম্প আয়োজনের মাইকিং শুনে আইভানকে সেখানে নিয়ে যান।

নির্দিষ্ট দিনে আই ক্যাম্পে আইভানের চোখ পরীক্ষা করা হলে তাতে ছানি সনাক্ত হয়। পরবর্তী প্রক্রিয়া অনুসারে কেস স্টাডি নিয়ে জানা যায় তার দুর্বিসহ কষ্টের কথা। এমএসএস আই কেয়ার তার জন্য দাতা যোগাড় করে বিনামূল্যে পার্টনার হাসপাতালের মাধ্যমে ছানির অপারেশনের ব্যবস্থা গ্রহণ করে।

বৃদ্ধা আইভানের চোখে ফিরে এসেছে আলো, সবকিছু পরিষ্কার দেখেন এখন। আত্মমর্যাদাসম্পন্ন এই মানুষটি গবাদি পশু পালনের মাধ্যমে জীবন নির্বাহ করছেন। যে সন্তানের সংসারে স্থান হয়নি, তার মুখাপেক্ষীও নন তিনি। জীবনের সায়াহ্নকালে আলোকবর্তিকা নিয়ে পাশে আসার জন্য তিনি দাতা এবং এমএসএস আই কেয়ারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। আইভানের ঘুরে দাঁড়ানোর এই গল্পটা আই কেয়ারের পরম প্রাপ্তি।

  • SHARE